আমাদের জীবনে যত রকমের ব্যাধি আছে তার মধ্যে ডায়াবেটিক হল এমন একটি মারণ ব্যাধি যা একবার পেয়ে বসলে আপনার ব্যাক্তিগত এবং সামাজিক জীবন কে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে যার শেষ পরিনতি খুব ভয়াবহ ।
ভারতের মত উন্নয়নশীল দেশে যেখানে ২০১০ সালে ৫১ মিলিয়ন জনসংখ্যা ডয়াবেটিক আক্রান্ত ছিল যা ২০৩০ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৮৭ মিলিয়ন (Source : Times Of India ,Dec 2016) । আর ঠিক এই কারনে ভারতবর্ষ কে ডয়াবেটিক এর রাজধানীও বলা হয়ে থাকে ।আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা ডায়াবেটিক এর সম্পরকে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন ।
ডায়াবেটিস কি ?
আমাদের দৈনন্দিন জীবন ধারাকে অব্যাহত রাখতে প্রতিদিন পরিমান মতো প্রয়োজন শর্করা ( Carbohydrate) , প্রোটিন , ফ্যাট , ভিটামিন, খনিজ লবন এবং জলের । যার চাহিদা আমরা প্রতিদিনের খাদ্য থেকে পুরন করে থাকি । আর প্রতিদিন খাদ্য থেকে পাওয়া কার্বোহাইড্রেট আমাদের শক্তির প্রধান উৎস হিসবে কাজ করে । কার্বোহাইড্রেট গ্লকুজে পরিনত হয়ে রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে ইন্সুলিন এর দারা কোষে প্রবেশ করে ।

এখন কোন কারনে যদি ইন্সুলিন এর ক্ষরণ বাধাপ্রাপ্ত হয় অথবা ইন্সুলিন কোষে পৌছাতে পারে না তখন রক্তে গ্লকোজ এর পরিমান বেড়ে গিয়ে যে অবস্থার সৃষ্টি করে তাকে ডায়াবেটিস মেলিটাস বা মধুমেহ বলা হয় । ২০০৬ এর ২০ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘ ডায়াবটিক কে বিশ্বের দীর্ঘমেয়াদি ,অবক্ষয়ী ও ব্যায়বহুল ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত করেন ।
ডায়াবেটিক এর প্রকার ভেদ
- টাইপ-১ ডায়াবেটিকস ।
- টাইপ-২ ডায়াবেটিকস ।
টাইপ-১ ডায়াবেটিক –
এক্ষেত্রে রোগীর দেহে ইন্সুলিন উৎপাদন এর হার কমে যায় । এ জন্য রোগীকে বাইরে থেকে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইন্সুলিন ইঞ্জেক্ট করা হয় । টাইপ -১ ডায়াবেটিক প্রধানত জেনেটিক কারনে হয়ে থাকে এবং তার জন্য HLDR-3 এবং HLDR-4 নামক জিন দুটি দায়ী থাকে । এই ক্ষেত্রে রক্তে গ্লকোজ এর পরিমান বেড়ে যায় এবং মুত্রের মাধ্যমে গ্লকোজ নির্গত হয় ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিক
কখনো কখনো অগ্নাশয়ের বিটা কোষ থেকে যে ইন্সুলিন ক্ষরিত হয় তাকে কোষ ব্যাবহার করতে পারে না । সাধারনত বয়স ৪০ এর পর এই ধরনের সমস্যা দেখা যায় । তবে আজকাল তরুণদের মধ্যেও টাইপ -২ ডায়াবেটিস দেখা যায় । চিনিতে থাকা সালফার অনু অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ফ্রি রেডিকেল এর সৃষ্টি করে । দেহে একবার ফ্রি রেডিকেল সৃষ্টি হবার পর তা যদি থেকে যায় তবে তা একটির পর একটি বিক্রিয়া সঙ্ঘঠীত হতে থাকে । এই ফ্রি রেডিকেল ডায়াবেটিক সহ অন্যান্য রোগের জন্য দায়ী । তাছাড়া সাদা ভাত ,স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট ,শারীরিক পরিশ্রম না করা টাইপ -২ ডায়াবেটিস এর জন্য দায়ী ।
লক্ষণ
- বার বার প্রস্রাব লাগা
- রাতে প্রস্রাবের কারণে ঘুম ভাঙ্গা
- বমি বমি ভাব হওয়া
- ওজন কমতে থাকা
- মাঝে মাঝে মাথা ব্যথা হওয়া
- ঘন ঘন ক্ষুধা লাগা
- মুখ শুকিয়ে যাওয়া
- ঘন ঘন পিপাসা লাগা
- মিষ্টি খাবারের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া
- একটুতেই উত্তেজিত হওয়া বা মন খারাপ করা
- মনসংযোগের অভাব হতে থাকা
কখনো কখনো রোগীর ক্ষেত্রে উপরের কোনও লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে অথবা একাধিক লক্ষণ দেখা যেতে পারে ।
ডায়াবেটিকস আছে কিনা কিভাবে জানবেন
সকালে খালি পেটে ৭.০ মিলিমোল/লিটার বা এর বেশি হলে এবং খাবার খাওয়ার পর ১১.০ মিলিমোল/লিটার বা এর বেশি হলে ডায়াবেটিকস এর সমস্যা রয়েছে ।